প্রকল্পটির যৌক্তিকতা
উন্নত দেশগুলোর তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ডায়াবেটিস দ্রুতহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে পৃথিবীতে মোট ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ৪২ কোটি। ডায়াবেটিসের এই বৃদ্ধির হার উন্ন্ত দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অনেক বেশী। অসংক্রামক রোগ বিশেষকরে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ-রক্তচাপ সর্ম্পকে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবের পাশাপাশি উপ-শহর, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে উন্নত মানের স্বাস্থ্য-কেন্দ্রের অপ্রুলতা, স্বাস্থ্য-কেন্দ্রেগুলোতে অসংক্রামক রোগ সনাক্তের যথেষ্ঠ সুযোগ না থাকা, প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবকে বাংলাদেশে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসাবে দেখা হয়ে থাকে।
বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। বাডাস কর্তৃক গৃহীত কর্মসূচী, বিশেষভাবে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশে ডায়াবেটিস নির্ণয় ও চিকিৎসা সেবা গ্রহণ যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি দেশব্যাপী আলেম-ওলামাদের মাধ্যমে রমজান মাসে রোজা রেখে রক্তপরীক্ষা ও ইনসুলিন নেয়া এবং প্রশিক্ষিত ম্যারেজ-রেজিস্ট্রারদের (কাজী) মাধ্যমে গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা গ্রহণ বিষয়ক সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমান প্রকল্পটি থেকে প্রশিক্ষিত ধর্মীয় নেতা/ইমামগণ ধর্মীয় অনুষ্টানে বিশেষ করে শুক্রবার নামাজে খুতবার মাধ্যমে ডায়াবেটিস ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগসমূহ প্রতিরোধ বিষয়ক সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে যেমন সাহায্যে করবেন তেমনি এলাকাবাসী অল্প দুরত্বে ও স্বল্পমূল্যে ডায়াবেটিস সনাক্তের পাশাপাশি ও রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক উপদেশ গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও, ডায়াবেটিস সনাক্ত হওয়া ব্যক্তিগণ বিনামূল্যে মোবাইল হেলথ লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির প্রশিক্ষিত চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা পরামর্শ নিতে পারবেন এমনকি স্বল্পমূল্যে ডায়াবেটিক সমিতির নিকটস্থ কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত প্রশিক্ষিত ইমামগণ দেশব্যাপী অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে যেমন কাজ করবেন তেমনি ডায়াবেটিস সনাক্তকরণ কাজের মাধ্যমে আর্থিকভাবে সাবলম্বী হতে পারবেন। প্রকল্পটি কার্যক্রম থেকে তৃনমুূলের সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠিও সুফল পাবে। অর্জিত হবে বাংলাদেশ সরকারের ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসজিডি এর প্রধান দুটি লক্ষ্য তথা দারিদ্র হ্রাস (লক্ষ্য-১) এবং সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা (লক্ষ্য-৩)।